Search
Close this search box.

সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য জানতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা

 সংখ্যালঘুদের সমস্যা নিয়ে কীভাবে অবাধ, সত্য তথ্য সংগ্রহ করা যায়, সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, প্রকৃত খবরটা জানতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এত বড় দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে হবে, যাতে তাৎক্ষণিক সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই হোক দোষী দোষীই। তাঁকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা বলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক শুরু হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজেদুর রহমান, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, জুনায়েদ আল হাবিব ও মুনির হোসাইন কাসেমী, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাক) মহাসচিব মাহফুজুল হক, ইসলামি বক্তা ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শায়খ আহমদুল্লাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব আবদুল মালেকসহ কয়েকজন আলেম বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারাও যোগ দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকের আলোচনা খোলাখুলি…, আমরা সবাই আলোচনা করব। আমাদের লক্ষ্যে কোনো গোলমাল নেই। তথ্যপ্রবাহ কীভাবে পাব, দোষীকে কীভাবে ধরব। যাতে সবাই সঠিক তথ্যটা পেয়ে যায়। এমন বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যার নাম দিয়েছি নতুন বাংলাদেশ। এটা আমাদের করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ শুনলাম, এখনো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাই আমি সবাইকে নিয়ে বসলাম…এটা থেকে কীভাবে উদ্ধার করা যায়।’

সরকার গঠনের আগে বিমানবন্দরে দেওয়া বক্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তখন আমি বলেছিলাম, আমরা একটা পরিবার। আমাদের নানা মত, নানা ধর্ম থাকবে, নানা রীতিনীতি থাকবে, কিন্তু আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এটাতে জোর দিয়েছিলাম। আমাদের শত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই। আমাদের জাতীয়তা, পরিচয়ের প্রশ্নে এক জায়গায় চলে আসি। আমরা বাংলাদেশি, এক পরিবারের সদস্য।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘শপথ গ্রহণের পরে শুনতে আরম্ভ করলাম, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। তখন মনটা খারাপ হয়ে গেল। এর পরপরই আমি ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেলাম। সেখানেও বললাম, আমরা একই পরিবারের সদস্য। সব দাবিদাওয়া বাদ দিলেও একটা দাবি পরিষ্কার, আমাদের সকলের সমান অধিকার, বলার অধিকার, ধর্মের অধিকার, কাজকর্মের অধিকার। সেটা এসেছে সংবিধান থেকে। নাগরিক হিসেবে প্রাপ্য, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেটা নিশ্চিত করা।’

বিদেশি কিছু প্রচারমাধ্যমে বলা হচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে—এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন আবার নতুন কথা, হামলা হচ্ছে, অত্যাচার শুরু হচ্ছে।…আমি খোঁজ নিচ্ছি, কী হচ্ছে? সব দিকে দেখলাম, এটা (হামলা-অত্যাচার) হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘…ভেতরে গিয়ে দেখতে হবে। সত্যটা কোথায়?’

সঠিক ও প্রকৃত তথ্য কীভাবে পাওয়া যাবে, তার ওপর জোর দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘সঠিক তথ্য কীভাবে পাব, সেটা আমাদের জানা৷ প্রকৃত তথ্য, অনেক সময় সরকারি তথ্যের ওপর ভরসা করে লাভ নেই। কর্তা যা চায়, সেভাবে বলে। আসলটা মন খুলে বলতে চায় না। আমরা আসল খবরটা জানতে চাই। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এত বড় দেশে যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে চাই। তাৎক্ষণিক খবর পেলে যাতে সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই দোষী দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।’