দেশে রপ্তানি আয় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩.২৮ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি হয়েছিল ১ হাজার ৭৫৫ কোটি ৬৯ লাখ ২০ হাজার ডলারের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, গত জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রভাব পড়ে দেশের শিল্প এলাকাগুলোতে। আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরেও অস্থিরতা ও অসন্তোষ অব্যাহত ছিল। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেই উৎপাদন ও রপ্তানি কার্যক্রম চলমান রেখেছেন পোশাক শিল্পোদ্যোক্তা ও শ্রমিকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শ্রম অসন্তোষে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানির গতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। বিশেষ করে সাভারের আশুলিয়া অঞ্চলের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোয় নিয়মিত বিরতিতে শ্রম অসন্তোষ চলছে গত ছয় মাস ধরে। এজন্য আশুলিয়া অঞ্চলের শিল্প মালিকদের নিয়ে স্বতন্ত্র একটি প্ল্যাটফরম গঠন করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের পোশাক উদ্যোক্তারা সেই শঙ্কা কাটিয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
বিশ্ববাজারে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাংলাদেশ থেকে মোট রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ ডলারের পণ্য। এরমধ্যে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের পণ্য ছিল তৈরি পোশাক। ইপিবি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট রপ্তানিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখা পণ্য পোশাকের অবদান ছিল ৮১ শতাংশ।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী একক মাস হিসেবে বাংলাদেশ থেকে গত ডিসেম্বরে ৪৬২ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছিল। ২০২৩ সালের একই মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৩৯৩ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ডলারের পণ্য। সে হিসাবে গত ডিসেম্বরে রপ্তানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭.৭২ শতাংশ।
ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, শুধু ডিসেম্বরে রপ্তানির সবচেয়ে বড় অংশজুড়ে থাকা তৈরি পোশাকের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৭৭ কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। এরমধ্যে ওভেন তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানির মূল্য ছিল ১৮৭ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৮৯ কোটি ১৮ লাখ ১০ হাজার ডলার। আর এ সময় জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে তৈরি পোশাকের ওভেন পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৯০৫ কোটি ৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার। নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানির মূল্য ১ হাজার ৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এত কিছুর মধ্যেও পোশাক রপ্তানিতে দুই অঙ্কেরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। তবে অস্থিরতা ও অসন্তোষের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে পড়তে পারে।